ফ্রিল্যান্সিং_এর_অবদান_ও_গুরুত্ব
বিগত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতিতে ফ্রিল্যান্সারদের অবদান লক্ষণীয়। দেশের বার্ষিক আয়ের এক উল্লেখযোগ্য অংশ আসে তাদের কাজের মাধ্যমে। বাংলাদেশ তথ্য-প্রযুক্তি অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ফ্রিল্যান্সররা ১০ কোটি ডলার আয় করে থাকেন। শ্রমব্যয় কম থাকায় বিশ্বের আউটসোর্সিং বাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু-বিভাগীয়ভ গবেষণা ও শিক্ষাদান বিভাগ অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউট (ওআইআই) এর এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে অনলাইন শ্রমিক সরবরাহে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার এর সংখ্যা বিশ্বে ১৬ শতাংশ। বাণিজ্যবিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস এর তথ্যমতে ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়ে এগিয়ে থাকা শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ফ্রিল্যান্সিং আয়ে বাংলাদেশ এর অবস্থান অষ্টম এবং বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২৭ শতাংশ। বিশ্বে বছরে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে আউটসোর্সিংয়ে। বাংলাদেশে এই খাতে আয় ১ বিলিয়ন হলেও, সম্ভাবনা আছে ৫ বিলিয়ন ডলারের। কিন্তু এই ৫ বিলিয়ন ডলার আয় এর লক্ষ্য পূরণ করতে ফ্রিল্যান্সার এর সংখ্যা ৫ গুণ বৃদ্ধি করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়কে এগিয়ে আসতে হবে।
যুবসমাজের বিশাল জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ, এশিয়ার কয়েকটি দেশগুলোর মধ্যে একটি। এর ১৬৩ মিলিয়ন লোকের মধ্যে প্রায় ৬৫% পচিশ বছরের কম বয়সি। এই বিশাল, তরুণ ও শক্তিশালী মানবসম্পদ, এখনো প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক বাজারে সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়জ্ঞানের অভাব রয়েছে। যদিও ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং গত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, হাজার হাজার বাংলাদেশের তরুণ এই সুযোগটি কাজে লাগাতে তাদের সহায়তা করার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং সরকারি সহায়তার প্রয়োজন। আমাদের আইটি সেক্টর এবং আইটি উন্নয়নের উত্থানের কারণে বাংলাদেশে আউটসোর্সিং বেড়েছে। দেশের অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে সরকারকে এই খাতে জোরদার হতে হবে যা প্রচুর বিদেশি রেমিট্যান্স উৎপাদন করতে পারে। আউটসোর্সিং বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছে এবং তা অর্থনীতির সার্থকতা অব্যাহত রাখবে বলে ধারণা করা যায়।
No comments